কালীপুর এজহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয়
বিদ্যালয়ের বিবরণ :
কালীপুর এজহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয় চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের ইজ্জতনগর গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মহান দানশীল ব্যক্তি ও শিক্ষানুরাগী এজহারুল হক সাহেব এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৪২ সালে, যার মাধ্যমে এ অঞ্চলে আধুনিক শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি একটি অ-সরকারি হলেও MPO সুবিধাভুক্ত বিদ্যালয়, যা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের আলোকিত ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বিদ্যালয়টি গ্রামীণ সমতল ভূমিতে অবস্থিত এবং সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার আধুনিকায়নে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে। ২০০৯ সালে NABIC (USA) এর সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত কম্পিউটার লিটারেসি সেন্টার (CLC) এবং ২০১২ সালে Mahbub Hoque (USA) এর অর্থায়নে গড়ে ওঠা স্মার্ট ক্লাসরুম (SCR) শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া সুবিধা ব্যবহার করে নিজেদের আধুনিক বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলছে।
২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘হীরক জয়ন্তী’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যা প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। এছাড়া ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ের একটি চারতলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, যা শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতি সঞ্চার করেছে।
আজ কালীপুর এজহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয় শুধু শিক্ষাদানেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, চরিত্র গঠন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সামাজিক নেতৃত্ব বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, যা প্রতিষ্ঠাতা এজহারুল হক সাহেবের মহৎ উদ্দেশ্যকে আজও অমলিন রাখছে।
প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ :
দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা (Skill-Based Learning):
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবনের বাস্তব চাহিদার সাথে মানানসই দক্ষতা অর্জনের সুযোগ প্রদান করা হয়, যেমন—যোগাযোগ দক্ষতা, আইসিটি, এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা।
দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা:
অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল অথচ মেধাবী ছাত্রীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা, যা তাদের পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে সহায়ক।
সামাজিক ও মানবিক শিক্ষা কার্যক্রম:
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মানবতা, সহমর্মিতা ও সমাজসেবার মানসিকতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি, দিবস পালন ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
পরীক্ষা ও মূল্যায়নে স্বচ্ছতা:
নিয়মিত অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, মক টেস্ট ও সৃজনশীল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান মূল্যায়ন করা হয়। ফলাফল প্রকাশে থাকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা।
সংযুক্তি ও পরামর্শ কেন্দ্র:
ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন, ক্যারিয়ার গাইডলাইন এবং মানসিক দিক থেকে ছাত্রীদের সহায়তার জন্য পরামর্শ কেন্দ্র ও শিক্ষাসংক্রান্ত দিকনির্দেশনার ব্যবস্থা রয়েছে।